শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: গুটি কয়েক স্বার্থান্বেষী মহল মাঝে মাঝে সুযোগ নিয়ে দেশের ১৭ কোটি ভোক্তাকে প্রতারিত করছে। এর আগে আলু, ব্রয়লার মুরগি, ডিম নিয়ে যা করছে, আজ চাল, কাল পেঁয়াজ নিয়েও তা করা হচ্ছে, আর এদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান রয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ডিম, ব্রয়লার মুরগির মতো এসএমএস এর মাধ্যমে গোটা বাজারটিকে অস্থির করে দেয়া হয়।
শনিবার বেলা ১১ টায় বরিশাল নগরীর ফরিয়াপট্টি, চকবাজার এলাকার পাইকারি বাজার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান।
এ সময় তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গে চালের বড় বড় কয়েকশ কল আছে, তারা কীভাবে একইভাবে জোটবদ্ধ হয়। তাহলে এখানেও ডিম ব্রয়লার মুরগির মতো এসএমএস এর মাধ্যমে গোটা চালের বাজারটিকে অস্থির করে দেয়া হয়। আর এটা যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিটি উপজেলা ও জেলায় কার্যক্রম নিব।
তিনি আরও বলেন, মোকামে চালের দাম বাড়ানোর পেছনে একটি চক্র সারাদেশে ধানের দাম বেড়েছে এমনটি প্রচার করেছে। ধানের দাম যদি বেড়েও থাকে সেই চালটা তো দুই মাস পরে অর্থাৎ বৈশাখ মাসে বাজারে আসবে। কিন্তু এখন ১৫-২০ দিনের ব্যবধানে ৪ টাকা বেশি দামে যে চালটা পাওয়া যাচ্ছে তার ধানের সোর্স তো আগের সোর্সের সাথে একই। অর্থাৎ বাজারের বর্তমান চালের ধানটা আগে কিনে মাড়াই করে বিভিন্ন জায়গায় স্টক করে রাখা। বর্তমানে কস্টিং এর কোন ডিফারেন্সও হওয়ার কথা না। কারণ ট্রাক ভাড়া, দোকান ভাড়া, কর্মচারী বেতন বাড়েনি। তাহলে ধানের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলে ১৫ দিনের ব্যবধানে পূর্বের ধানের চালের দাম বাড়িয়ে দেয়া অযৌক্তিক। আর অযৌক্তিক বিষয়ের বিরুদ্ধেই আমরা কাজ করছি।
তিনি বলেন, ঠিক ১৫-২০ দিনের ব্যবধানে একই মোকামের একই ভাউচারে একই চাল ৪ থেকে সাড়ে ৪ টাকা ব্যবধান হচ্ছে। অর্থাৎ ডিসেম্বরের শেষে যে চালটা এসেছে এবং জানুয়ারির ১০-১২ তারিখে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে সেখানে ৪ টাকার ডিফারেন্স ফরিদপুর ও কুষ্টিয়ার আড়ত থেকেই হচ্ছে।
মহাপরিচালক বলেন, বরিশালে তেমন কোন ব্যত্যয় পাওয়া যায়নি, তারা যে দামে চাল কিনছে আর তার ওপর সামান্য লাভ করেই বিক্রি করে দিচ্ছে। তবে এখানে হাজার হাজার চালের বস্তা রয়েছে। জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিদপ্তরের স্থানীয় কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তারা যেন তদন্ত করে দেখে আগের কম দামের কেনা চাল স্টক করে বাড়তি দামে বিক্রি করছে কিনা। কারণ স্টকের চাল যদি বাড়তি দামে বিক্রি হয়, সেটাও একটি বড় ঘাপলা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে সকল জায়গায় পাইকারি ও খুচরো চাল বিক্রি হচ্ছে সেখান থেকে তথ্য নিচ্ছি আমরা। আর এখান থেকে তথ্য নিয়ে যে সোর্স থেকে দাম বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সেখানে তদন্ত করবো। ব্যত্যয় ঘটলে প্রয়োজনে সিলগালা করে দিব, আইনের আওতায় নিব। এসময় তিনি আসন্ন রমজান উপলক্ষে ডাল, চিনি, তেলসহ রমজানের পণ্য নিয়ে যাতে কেউ কারসাজি না করতে পারে সেজন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কাজ করছে বলেও জানান।
অপরদিকে বরিশালের পাইকারী বাজারে পাওয়া খোলা ভোজ্য তেলের অপরিষ্কার ড্রাম দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভোজ্য তেলের ক্ষেত্রে লেভেল বিহীন ড্রামে করে পাম তেল, সুপার পাম এবং সয়াবিন পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর দামেও বড় পার্থক্য রয়েছে।
বাজার পরিদর্শন শেষে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আয়োজনে চাল, ভোজ্য তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজনের মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন তিনি।
Leave a Reply